You are currently viewing মেয়েদের চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম, চুলের জন্য কোন তেল ভালো?
চুলের জন্য কোন তেল ভালো

মেয়েদের চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম, চুলের জন্য কোন তেল ভালো?

চুলের জন্য তেল ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। সেই আদিকাল থেকেই চুলে তেল ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। বাজারে এখন নানা ধরনের তেল পাওয়া যায়। কিন্তু সব তেলই কি চুলের জন্য ব্যবহার উপযোগী হয়। আসুন জেনে নেই চুলের জন্য কোন কোন তেল ভালো  ও উপকারী।

রুক্ষ চুলের জন্য কোন তেল ভালো?

খুব ঘন ঘন চুল ধুলে চুলের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে চুল রুক্ষ হয়ে চুলের সজীবতা নষ্ট হয়ে যায়। শ্যাম্পু, কন্ডিশনার এবং অন্যান্য সামগ্রীর উচ্চ রাসায়নিক উপাদান চুলকে রুক্ষ ও শুষ্ক করে দেয়। যার ফলে এর প্রাণ ফিরিয়ে আনতে তেলের ব্যবহার জরুরি হয়ে পরে। আসুন জেনে নেই কিছু তেল সম্পর্কে যা রুক্ষ চুলের জন্য উপকারী ভূমিকা পালন করবে।

নারকেল তেল

চুলের যত্নে নারকেল তেলের বিকল্প নেই। সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন এই তেল সামান্য গরম করে চুলে ম্যাসাজ করুন। চুলের শুষ্কতা দূর হয়ে যাবে।

ক্যাস্টর অয়েল

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ক্যাস্টর অয়েল এর ব্যবহার করলে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে । এছাড়া চুলকে ঝলমলে ও মজবুত করে।

অলিভ অয়েল

অলিভ অয়েলে রয়েছে ভিটামিন ই যুক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড যা চুলকে করে নরম ও মসৃণ। চুলের প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে তাই নিশ্চিন্তে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।

আমন্ড অয়েল

ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন সমৃদ্ধ আমন্ড অয়েল চুলকে ভেঙে যাওয়া থেকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি চুলকে করে জটহীন ও ঝলমলে।

মেয়েদের চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম 

চুল পড়া মেয়েদের জন্য অতি সাধারণ একটা বিষয়। চুল পড়া বন্ধ করতে নিয়মিত সুষম খাবার খাওয়া উচিত। এছাড়া স্বাভাবিকভাবে চুল শুকানো, উচ্চ তাপে ব্লো-ড্রায়ার ব্যবহার কমানো বা ব্যবহার না করা, খুব টাইট হেয়ারস্টাইল এড়িয়ে চলা, নিয়মিত চুল আঁচড়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাছাড়াও চুল ধোয়া বা আঁচড়ানোর সময় খুবই যত্নশীল হওয়া উচিত। এর পরেও চুল পড়া বন্ধ করতে প্রধান উপাদান হলো তেল ব্যবহার করা। আসুন জেনে নেই কিছু তেল সম্পর্কে যা মেয়েদের চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে। 

চুলের জন্য কোন তেল ভালো

নারিকেল তেল ও কারি পাতা 

চুলের সুস্থতা ও মসৃণতা রক্ষায় নারিকেল তেল বেশ জনপ্রিয়। এতে রয়েছে লরিক অ্যাসিড যা চুলের গোড়ায় প্রোটিন যোগায়। অন্যদিকে কারি পাতা উচ্চ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যামিনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। একটা পাত্রে তেল গরম করে তাতে কিছু তাজা কারি পাতা দিয়ে গরম করে নিতে হবে। এরপর এটা ঠান্ডা করে মাথার ত্বক ও সম্পূর্ণ চুলে মালিশ করে নিতে হবে। ৩০ মিনিট পরে শ্যাম্পু করে নিতে হবে।

ভৃঙ্গরাজ  তেল

এই তেল ভৃঙ্গরাজ গাছ থেকে পাওয়া যায়। যা চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এতে রয়েছে লৌহ, ভিটামিন ই এবং ম্যাগনেসিয়াম। এসব উপাদান চুলের ফলিকলকে মসৃণ করে গোড়া শক্ত করতে সহায়তা করে। এই তেলের সাথে আমলকী ও নিমপাতা মেশালে মাথার ত্বক সুস্থ রাখে ও চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এটা রাতে ঘুমানোর আগে মাথার ত্বকে মালিশ করে সকালে ধুয়ে ফেলতে হবে।

সরিষার তেল ও অ্যালোভেরা

সরিষার তেল ও অ্যালোভেরা মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে  ৪০ মিনিট রাখুন। সপ্তাহে দুইদিন এটি ব্যবহার করুন।

কোন ভিটামিনের অভাবে চুল ঝরে যায়

চুল পড়া অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এর অভাবে ঝরে যায় এবং রুক্ষ হয় –

  • ভিটামিন-এ এর অভাবে চুল রুক্ষ ও প্রাণহীন হয়ে ওঠে। আবার অতিরিক্ত ভিটামিন-এ এর জন্য চুল ঝরে পড়তে পারে। তাই খাদ্য তালিকায় দুধ, গাজর, মুলা, সবুজ শাকসবজি থাকা প্রয়োজন। 
  • ভিটামিন-ই কম খেলেও চুল রুক্ষ হতে পারে। তাই,ভিটামিন-ই যুক্ত খাবার বেশি করে খাবেন। দরকার হলে ভিটামিন–ই ক্যাপসুল সপ্তাহে 1–2 টি করে খাবেন। কেনার আগে জিজ্ঞেস করে নেবেন, কারণ খাওয়ার জন্য এবং চুলের জন্য আলাদা ভিটামিন-ই ক্যাপসুল পাওয়া যায়। আপনি চাইলে খাওয়ার টা চুলেও ব্যবহার করতে পারেন।
  • এছাড়াও ভিটামিন-সি এর অভাবে চুল খসখসে শুষ্ক হয়ে ওঠে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় তাই লেবু জাতীয় ফল কমলালেবু, কেনু, মালটা ইত্যাদি থাকা প্রয়োজন।
  • ভিটামিন-বি চুলকে চকচকে ও ঘন করে তোলে। শস্যদানা, দুধ, ডিম, কলা, বাদাম, কলিজা ও ডালে ভিটামিন-বি রয়েছে। 

বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো চুলের তেল কোনটি?

বিশেষজ্ঞদের মতে চুলের জন্য সব থেকে ভাল মানের তেল হল নারকেল তেল। খাটি নারকেলের তেল চুলের জন্য খুবই উপকারী। সপ্তাহে এক-দু দিন এই নারকেল তেল অবশ্যই চুলে লাগান উচিত। আবার চুলের পুষ্টি জোগাতে খুব ভাল কাজ করে এটি। বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্র্যান্ড এর নারকেল তেল রয়েছে। তবে যে তেল ভার্জিন সেই তেল গুনে ও মানে ভাল হয়। নারকেল তেল প্রাকৃতিকভাবে আপনার চুলকে পুষ্টি জোগায় ।

চুলের জন্য কোন তেল ভালো

ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি চুল গজায়?

চুলের জন্য অনেকেই ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করে থাকেন। এটি চুলের জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান যা চুলকে নানাভাবে পুষ্টি প্রদানে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। যেমন –

  • এই ক্যাপসুল চুল পড়ার সমস্যা মিটিয়ে, নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। 
  • এই ভিটামিন হেয়ার ফলিকলকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
  • চুলে পর্যাপ্ত পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে এই ভিটামিন।
  • এই ভিটামিন সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনী রশ্মি থেকে চুলকে রক্ষা করে।

চুলের জন্য সঠিক পরিচর্যা হতে পারে আপনার চুলকে তেল দেয়ার মাধ্যমেই। আপনার চুলকে প্রাণবন্ত ও আকর্ষণীয় করতে তাই আপনার চুলের প্রতি যথেষ্ট মনোযোগী হওয়া এবং সঠিক যত্ন নেয়া অতীব জরুরি। আশা করা যায় উপরিউক্ত তথ্যগুলা আপনার উপকারে আসবে।

Leave a Reply